রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ক্ষেত্রে বিচারপ্রার্থীর পরিবার বা ভুক্তভোগীর সম্মতি ছাড়া কাউকে ক্ষমা না করার নীতিতে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, অতীতে রাষ্ট্রপতির একক সিদ্ধান্তে চিহ্নিত অপরাধীদের ক্ষমা করার ঘটনা ঘটেছে, যা ন্যায়বিচারের পরিপন্থি ছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের আগে একটি সুপারিশ কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমার বিষয়ে পরামর্শ দেবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা আজ নতুন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যোগ করেছি। যদি কোনো ব্যক্তিগত অপরাধ, যেমন হত্যাকাণ্ড ঘটে এবং দোষী ব্যক্তিকে দণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে ভুক্তভোগী পরিবারের সম্মতি ছাড়া রাষ্ট্রপতি বা কমিটি এককভাবে সেই সাজা মাফ করতে পারবেন না। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সম্মতি দিলে তবেই ক্ষমা বিবেচনায় আসবে। এতে ইনসাফ নিশ্চিত হবে।
বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ সম্প্রসারণে ঐকমত্য
আলোচনায় হাইকোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হয় বলে জানান তাহের। তিনি বলেন, ২০ কোটি মানুষের দেশে সবাই ঢাকায় এসে বিচার পাওয়ার সুযোগ রাখে না। তাই বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপন সময়ের দাবি। এর মাধ্যমে বিচার মানুষের আরও কাছাকাছি পৌঁছাবে।
তিনি জানান, বিচারপতি ও দক্ষ আইনজীবীর ঘাটতির কথা এলেও প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মেধাবী ব্যক্তিদের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে এ ঘাটতি পূরণ সম্ভব। “ডাক্তারদের যেমন এলাকায় পাঠানোর জন্য রাষ্ট্র উদ্যোগ নিয়েছে, তেমনিভাবে পরিবেশ তৈরি করা গেলে আইনজীবীরাও এলাকায় প্র্যাকটিসে আগ্রহী হবেন।
সংবিধানে একটি একক সুপ্রিম কোর্ট রাখার বিষয়টি অপরিবর্তিত রেখে বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখন স্পষ্ট ঐকমত্য তৈরি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তাহের বলেন, সার্কিট বেঞ্চ কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। তাই বিভাগীয় শহরে স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি।