রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরে গোসলের ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে এক গৃহবধূকে একাধিকবার ধর্ষণ ও মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বখাটে আরিফুল ইসলাম (২৫)-এর বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর বাহার কাছনা এলাকায়। এ ঘটনায় পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো স্থানীয় মাতব্বরদের মাধ্যমে মীমাংসার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। প্রভাবশালী আরিফুলের পরিবারের দায়ের করা মারপিটের মামলাও রেকর্ড করা হয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হলে আরিফুলসহ পরিবারের লোকজন গা-ঢাকা দিয়েছে।
সূত্রমতে, গত এপ্রিল মাসে রংপুর নগরীর বাহার কাছনা এলাকার এক দিনমজুরের গৃহবধূ’র (২০) গোসলের সময় টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে ভিডিও ধারণ করে পার্শ্ববর্তী আব্দুর রাজ্জাকের বখাটে ছেলে আরিফুল। এরপর সেই গোসলের ভিডিও দেখিয়ে আরিফুল ওই গৃহবধূর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেবে বলে হুমকি দেয়।
ওই গৃহবধূর ভাসুর বলেন, আরিফুলের বাবা তাদের বাড়িতে মীমাংসার জন্য ডাকলে আমরা যাই। তাদের বাড়িতে আগে থেকে দা-ছোরা নিয়ে তারা প্রস্তুত ছিল। আমরা যাওয়ার পর আমাদের ওপর হামলা চালায় আরিফুল, আরিফুলের বাবা আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), চাচা রেজাউল ইসলাম (৪০), ইসলামুল হক (২৫)। এতে আমার হাত কেটে যায়। এ ঘটনার পর আমরা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ টালবাহানা শুরু করে এবং ঘটনাটি মীমাংসার জন্য বলে। এখন আরিফুলের পরিবার আমাদের নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশসহ সবাই তাদের পক্ষে। আমরা এখন বড় অসহায়।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বলেন, পুলিশ, মাতব্বর সবাই বলছে মীমাংসা করে। আমরা গরিব বলে কেউ আমাদের পাশে নেই। দেশে যদি আইন থাকে তবে আমি অবশ্যই ধর্ষণের ন্যায্য বিচার পাবো। আমি আরিফুলের ফাঁসি চাই।
স্থানীয় এলাকাবাসী অজিহার আলী বলেন, আমরা এলাকাবাসী ওই গৃহবধূকে নিয়ে থানায় গিয়েছিলাম মামলা করতে। ওসি বলে আরিফুল ভিডিও করেছে, ধর্ষণ করেছে, মারামারি করেছে এর প্রমাণ কি? পরে আমরা ভিডিও, আরিফুলের স্বীকারোক্তিমূলক কলরেকর্ড নিয়ে থানায় অভিযোগ করেছি। এরপর থেকে থানা পুলিশ ৩-৪ দিন ধরে ঘুরছে আর আপস করার জন্য চাপ দিচ্ছে।
এ বিষয়ে আরিফুলের দাদা মাদ্রাসার দপ্তরি আফছার আলী বলেন, আমার নাতির নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে তারা। সে ঢাকায় চাকরির খোঁজে গিয়েছে।
এ বিষয়ে হারাগাছ থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাটি দেখছেন। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারবো না।