আন্তর্জাতিকবিশেষ প্রতিবেদনসর্বশেষ সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যে নারীশ্রমিক নির্যাতন বন্ধে ৮ দফা সুপারিশ

মধ্যপ্রাচ্যে নারীশ্রমিক নির্যাতন বন্ধে ৮ দফা সুপারিশ

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় নারী শ্রমিক নির্যাতন বন্ধে ৮ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার হয়ে গৃহকর্মী আবিরনের লাশ হয়ে ফিরে আসার ঘটনায় গঠিত কমিশনের তদন্ত কমিটি এসব সুপারিশ করে। বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদ এই তথ্য জানান।

জনসংযোগ কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এই তদন্ত প্রতিবেদন ইতোমধ্যেই প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’

সুপারিশে বলা হয়েছে:

১। সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মীদের ওপর নির্যাতন দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর অন্যতম কারণ ভাষাগত দুর্বলতা। তাই গৃহকর্মী হিসেবে বিদেশ গমনেচ্ছুক নারী কর্মীকে সংশ্লিষ্ট ভাষা পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ভবনে কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ভাষা শেখানো প্রয়োজন। ফিরে আসা গৃহকর্মীদের দিয়ে এই প্রশিক্ষণ পরিচালনা করলে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।

২। রিক্রুটিং লাইসেন্স ভাড়া দেওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

৩। প্রত্যেক গৃহকর্মীর স্বাস্থ্যপরীক্ষা যথাযথভাবে করতে হবে।

৪। রিক্রুটিং এজেন্সির পরিবর্তে সীমিত আকারে দক্ষ নারী শ্রমিক সরাসরি সরকারিভাবে (জি টু জি পদ্ধতিতে) পাঠানো উচিত।

৫। বিদেশে স্পন্সরের অধীনে থাকার সময় যেকোনো দুর্ঘটনা, মারধর, ধর্ষণ, হয়রানির যথাযথ বিচার পাওয়ার অধিকার আদায়ে মামলা পরিচালনায় দূতাবাসের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রয়োজন।

৬। স্থানীয়ভাবে আইন সহকারী নিয়োগের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাতে হবে।

৭।  জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণব্যুরো (বিএমইটি)র ডাটাবেজে বিদেশগামী সব কর্মীর তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। যিনি ডাটা এন্ট্রি করবেন, তাকে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন ও আউটের ক্ষমতা দিতে হবে।

৮। অভিবাসী কর্মী গ্রহণকারী দেশগুলোর মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পর্যায়ক্রমে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করতে পারে।

এছাড়া, আবিরনকে প্রতারণার মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠানোর সঙ্গে জড়িত এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া, তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘কফিনে ফিরলো আবিরনেরও স্বপ্ন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সংস্থাটির সদস্য ড. নমিতা হালদাকে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে।

এর আগে, ২০১৭ সালের মাঝামাঝি খুলনার পাইকগাছা উপজেলার রামনগর গ্রামের আনছার সরদারের মেয়ে আবিরন সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে যান। সেখানে নির্যাতনের শিকার হয়ে গতবছরের ২৪ মার্চ মারা যান তিনি। তার লাশ সাত মাস রিয়াদের একটি হাসপাতালে পড়ে ছিল। এরপর বাংলাদশে সরকার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনে।

Comment here