সোমবার (১৫ জুন) কৃষক লীগ আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বলেন দলের নেতাকর্মীসহ দেশবাসী সবাইকে অন্তত তিনটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা বদ্বীপ। এই বদ্বীপে টিকে থাকা এবং উন্নতি করা খুবই কঠিন একটা কাজ। প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়। বদ্বীপকে বাঁচাতে হলে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ প্রয়োজন।’ এজন্য দেশের প্রতিটি এলাকায় বৃক্ষরোপণ করে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সবুজ বেষ্টনী গতে তুলতে হবে। সারাদেশে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে পারলে ঝড় জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করবে। আমাদের কৃষক লীগসহ সব অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বলবো, প্রত্যেকে তিনটি করে গাছ লাগান। শুধু গাছ লাগালেই হবে না গাছের যত্ন নিতে হবে। এবার দেখতে চাই কে কতটি গাছ লাগিয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী অন্তত একটি করে ফলজ, বনজ ও ওষুধি গাছ লাগানোর নির্দেশ দেন। এবার প্রায় এক কোটি বৃক্ষরোপণের লক্ষ্যের কথা জানান তিনি।
সরকার প্রধান বলেন, ‘এবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘টাইম ফর নেচার’ অর্থাৎ প্রকৃতির জন্য সময়। প্রকৃতির জন্য সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এমন একটা পরিবেশে কাজ করছি করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গেছে। সব ধরনের যান চলাচল যেমন বন্ধ, মানুষের জীবন যাত্রাও স্থবির। করোনাভাইরাসের কারণে বহু মৃত্যু ঘটছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। করোনাভাইরাসে মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। আবার সব খারাপের একটা ভালো দিক থাকে। এক্ষেত্রে সেটা হলো— প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেটা নষ্ট হচ্ছিল, ওজন স্তর যেটা সৃষ্টি হয়েছিল, প্রকৃতি যেখানে সম্পূর্ণরূপে দূষিত হয়ে যাচ্ছিল, দূষণ গ্রাস করছিল— সেখানে করোনাভাইরাস আসার পর তিন থেকে চার মাস লকডাউন থাকায় প্রকৃতি হেসে খেলে উঠেছে। সবুজে সবুজে ভরে যাচ্ছে, ফুলে ভরে যাচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ এর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, এই ঢাকা শহরের বেশির ভাগ গাছ তারা কেটে ফেলেছিল। গাছে গাছে সবুজ ছিল ঢাকা শহর। যখনই জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হলো, এই তেজগাঁও এলাকা থেকে বাংলা অ্যাকাডেমি পর্যন্ত সবগাছ কেটে ফেললো। তার একটা ভীতি ছিল এজন্যই কেটে ফেলেছিল। এভাবে সারাদেশে বৃক্ষ নিধন করেছে। আমরা যেমন রোপণ করি, তারা নিধন করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুষ্টির জোগান বাড়াতে হবে। তাছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বে যে সংকট দেখা দিয়েছে, খাদ্যের অভাব যেনো না হয়— সেদিকে লক্ষ্য রেখে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই করতে হবে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ আরও উৎকর্ষ করতে চাই। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাচ্ছি প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত উন্নত একটা প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে এগিয়ে যেতে।’
কৃষক লীগের যারা বেশি গাছ লাগাবেন তাদের পুরস্কৃত করার কথাও অনুষ্ঠানে ঘোষণা করা হয়। এ সময় শেখ হাসিনা পুরস্কার দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কৃষক লীগের ফান্ডে অর্থ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন— সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বর্তমান কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি।
Comment here
You must be logged in to post a comment.