সোমবার, ২৯ মে ২০২৩
হোম » মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি » চীনা সেনা কর্মকর্তাদের তেহরান সফর: কৌশলগত সামরিক সহযোগিতার পথে দু’দেশ

চীনা সেনা কর্মকর্তাদের তেহরান সফর: কৌশলগত সামরিক সহযোগিতার পথে দু’দেশ

ইরান-চীন সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্য চীনের সেনাবাহিনীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সচিব জেনারেল শিয়াও ইউন মিং’র নেতৃত্বে সেদেশের একটি উচ্চপদস্থ সামরিক প্রতিনিধি দল এখন তেহরানে অবস্থান করছেন।

শিয়াও ইউন মিং ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ হোসেইন বাকেরির সঙ্গে সাক্ষাতে ইরানের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। ইরান ও চীনের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদি সামরিক সম্পর্ক বজায় রয়েছে এবং পশ্চিম এশিয়া ও দক্ষিণ চীন সাগরে যৌথ হুমকি মোকাবেলার বিষয়টি তাদের আলোচনায় প্রাধান্য পায়। ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ হোসেইন বাকেরি এ বৈঠকে সম্পর্ক আরো মজবুত করতে ইরান ও চীনের দৃঢ় ইচ্ছার কথা উল্লেখ করে দু’দেশের মধ্যে আগামী ২৫ বছরের জন্য কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তেহরান-বেইজিং সম্পর্ক অন্য কোনো দেশের ওপর প্রভাব ফেলবে না।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরান ও চীন এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বৃহত দেশ এবং দু’দুটি প্রাচীন সভ্যতার অধিকারী। এ ছাড়া তারা অভিন্ন হুমকির মুখে রয়েছে এবং একই লক্ষ্য-উদ্দেশ্য রয়েছে। বিশেষ করে দু’টি কারণে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে চীন সরকার। প্রথম কারণ হচ্ছে, জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য নিরাপদ অঞ্চল নিশ্চিত করা যাতে ওই অঞ্চলে চলাচলকারী জাহাজের জন্য কোনো হুমকি না থাকে। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, পশ্চিম এশিয়ায় ভূ-রাজনৈতিক দিক দিয়ে ইরান গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে যা কিনা চীনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রকৃতপক্ষে, ইরানের সঙ্গে ১৫টি দেশের সীমান্ত রয়েছে এবং উত্তর ও দক্ষিণের দেশগুলোর জন্য ইরান গুরুত্বপূর্ণ ট্রাঞ্জিট রুট হিসেবে পরিচিত। চীনের দৃষ্টিতে ওয়ান বেল্ট – ওয়ান রোড প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য ইরানের ভূমিকা ও দেশটির ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া, জ্বালানির ভাণ্ডার হিসেবেও বিশ্বে ইরানের অবস্থান অনেক উপরে।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আমেরিকা এ অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির যে চেষ্টা করছে তা চীনসহ অন্যান্য দেশের আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে যারা কিনা মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা চায়। যে বিষয়টি চীনকে চিন্তিত করে তুলেছে তা হচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করে পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়ার পরিণতি মোটেই ভাল হবে না।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সম্প্রতি বেইজিংএ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বলেছেন, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় যে কোনো পদক্ষেপের প্রতি চীনের সমর্থনের কথা জানান। মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সংকট সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের কারণে চীনও এ অঞ্চলের কৌশলগত সমুদ্র এলাকায় নিজের প্রভাব বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এ অঞ্চলে ইরানের প্রভাবশালী ভূমিকা চীনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শত্রুর হুমকি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা ইরানের রয়েছে।

এ অবস্থায় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরান ও চীনের মধ্যে আগামী ২৫ বছরের জন্য কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরির যে পদক্ষেপ দেয়া হয়েছে তা সামরিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে নয়া দিগন্তের সূচনা করবে। দু’দেশের সেনাবাহিনীর যৌথ কমিশনের বৈঠকে যৌথ নৌমহড়া চালানোর বিষয়েও আলোচনা হবে।

আরো পড়ুন

বীর মুক্তিযোদ্ধারা রিকশা চালাবে আমি ক্ষমতায় থাকতে সেটা হবে না: প্রধানমন্ত্রী'

বীর মুক্তিযোদ্ধারা রিকশা চালাবে আমি ক্ষমতায় থাকতে সেটা হবে না: প্রধানমন্ত্রী’

দলমত নির্বিশেষে সব মুক্তিযোদ্ধাকে আওয়ামী লীগ সম্মান দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন,বীর …