দেশে কোভিড সংক্রমণ যখন তুঙ্গে, তখনও স্বাস্থ্যবিধি মানায় চোখে পড়ছে উদাসীনতা। বাজার, চায়ের দোকান, সেলুন, গণপরিবহনে অনেকেই সামাজিক দূরত্ব মানছেন না, পরছেন না মাস্ক। এমনকি হাসপাতালেও মিলেছে এমন চিত্র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতা ছাড়া কোনোভাবেই করোনা মোকাবিলা সম্ভব নয়।
করোনার মধ্যে গণপরিবহন চালু হলেও রাজধানীর শনির আখড়ার প্রতিদিনের চিত্রটি দেখে মনে হবে নির্দিষ্ট সময়ে অফিস কিংবা গন্তব্যে পৌঁছানোর প্রতিযোগিতা সেটি। যাত্রা পথে স্বাস্থ্য সুরক্ষা দূরে থাক, মানছেন না সামাজিক দূরত্বটুকুও। বাস, লেগুনাসহ তিন চাকার যানে গা ঘেঁষে বসে নিত্য চলাচল।
একজন যাত্রী বলেন, যেভাবে উঠছি সেটা কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। কিন্তু আমি উঠতে পারছি না। কাজে যেতে হলে এটা আমাকে করতেই হচ্ছে।
যাত্রাবাড়ীর পাইকারি ও খুচরা বিক্রির বাজার শত শত মানুষের ভিড়। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই মানছেন না সামাজিক দূরত্ব কিংবা স্বাস্থ্যবিধি। বাজারগুলোর দৃশ্য দেখে কেউ বলবে না সেই এলাকায় করোনা সংক্রমণ চারশ’র কাছাকাছি।
আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থাকলেও অনেকেই যাচ্ছেন এলাকার নরসুন্দরের কাছে। সেখানেও বসার আসন আর সরঞ্জামাদি জীবাণুমুক্ত না করেই চলে চুল-দাড়ি কাটা।
একই অবস্থা পাড়ার-মহল্লার চায়ের দোকানেও। পাশাপাশি বসে আড্ডা, নামকাওয়াস্তে পানিতে ধুয়ে অন্যের চুমুক দেয়া কাপেই তুলে দিচ্ছেন চা।
এর থেকেও ভয়াবহ রাজধানীর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার ন্যূনতম মাস্ক না পরেই ঘুরে বেড়ানো। মানছেন না সামাজিক দূরত্বও।
একজন রোগী বলেন, এখন আসছি, মাস্ক কিনে তারপর ডাক্তার দেখাতে যাব।
লকডাউন শিথিল হওয়ার কয়েকদিন অতিক্রম হতে চললেও ব্যক্তিগত সুরক্ষার ক্ষেত্রে এখনও সর্বোচ্চ সচেতন হয়নি সাধারণ মানুষ। এতে একের পর বাড়ছে সংক্রমণ। বাড়ছে কয়েকগুন স্বাস্থ্যঝুঁকি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকানো যাবে না আর।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক মোস্তফা কামাল রউফ বলেন, মানুষ বের হলেই আক্রান্ত মানুষের সংষ্পর্শে যাবে এবং আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়বে। তবে মানুষের সঙ্গে শারীরিক দূরত্বটা বজায় রাখলে সক্রমণের হার কমবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ বলেন, সবাইকে একযোগে সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
এছাড়া করোনা রোধে আরও কঠোর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলেও মনে করনে সংশ্লিষ্টরা।
Comment here
You must be logged in to post a comment.