জাতীয়সর্বশেষ সংবাদ

‘করোনার ভয়ে মানুষকে না খেয়ে মরতে দিতে পারি না’ প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘করোনার ভয়ে তো আমরা মানুষকে না খাইয়ে মারতে পারি না। তাদের বেঁচে থাকার ব্যবস্থাটা আমাদের নিতে হবে। যেসব এলাকায় সংক্রমণ বেশি সেখানে লকডাউন করে তা আটকানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

রবিবার (১৪ জুন) জাতীয় সংসদে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর মৃত্যুতে সংসদে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়।

বাংলাদেশ করোনা সংক্রমণের কথা তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। দেশের দারিদ্র্যসীমা কমিয়ে এনেছি। ১০ বছরে দারিদ্র্যসীমা ৪০ ভাগ থেকে আমরা ২০ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের জিডিপি বেড়ে গিয়েছিল। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছিলাম। আমাদের আশা ছিল মুজিববর্ষ উদযাপন করবো। কিন্তু এসময় এক অদৃশ্য শক্তি, করোনাভাইরাস যা কেউ চোখে দেখতে পারে না, বুঝতেও পারে না তা সারা বিশ্বটাকে স্থবির করে দিলো। সারা বিশ্বে যেন কেমন একটা অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করলো। একটা আতঙ্ক, ভয়, ভীতি, মৃত্যু আতঙ্ক যেন সারা বিশ্বকে পেয়ে বসেছে। এটাই হচ্ছে অদ্ভুত ব্যাপার। এ ধরনের পরিবেশ আগে আমরা আর কখনও দেখিনি।’

করোনা মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষকে বোঝাতে আপনারা অন্তত একটু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। এটা খুব সাংঘাতিক একটা সংক্রামক ব্যাধি। সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেশবাসীকে বলছি। পাশাপাশি এটা তো বাস্তবতা করোনা ভয়ে তো আমরা মানুষকে না খাইয়ে মারতে পারি না। তাদের বেঁচে থাকার ব্যবস্থাটা আমাদের নিতে হবে। জীবনযাত্রা যাতে চলে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা ঠিক করেছি যেসব এলাকায় সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে তা লকডাউন করা। যাতে সেখান থেকে যেন সংক্রমণ না হয়। পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেন সচল থাকে সেদিকে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা একটা বাজেটও দিতে সক্ষম হয়েছি। এই কাজগুলো যখন করছি সেটা এক ধরনের  যুদ্ধ। সেই সময় যাদের আমরা সবসময় কাছে পেয়েছি তাদের দু’জনকে হারানো অত্যন্ত কষ্টকর।’

নেতাকর্মীদের মৃত্যুতে পাশে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য কিন্তু করো না সংক্রমণের কারণে সেটা সাম্প্রতিক সময়ে সম্ভব হচ্ছে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনও একজন কর্মী মারা গেলে ছুটে গিয়েছি। জানাজায় অংশ নেওয়া, ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো, পরিবারের সঙ্গে দেখা করা। কিন্তু এখন এমন একটা অস্বাভাবিক পরিবেশ সেটা আর করতে পারছি না। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একটু দেখা করা, তাদেরকে একটু সান্ত্বনা দেওয়া সেই সুযোগটা পেলাম না। এটা সব থেকে কষ্টকর।’

প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা শেষে সংসদে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

Comment here