করোনাভাইরাসের সংক্রমণের থাবা বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত সরকারি ছুটি বাড়তে পারে।
তবে ছুটির বিষয়টি নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। তার নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
সরকারি ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন মঙ্গলবার (১২ মে) দুপুরে রাইজিংবিডিকে বলেন, করোনার সংক্রমণের একেবারেই পিকটাইম এখন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টানা সরকারি ছুটি বাড়তেও পারে। তাছাড়া ঈদের আগে বেশি কর্মদিবসও নেই। দেখি প্রধানমন্ত্রী কী বলেন, এজন্য অপেক্ষা করছি।
সরকারি ছুটিতে সর্বসাধারণের ঘোরাফেরায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেভাবে মানুষজন দোকানপাট ও মার্কেটে ঘোরাঘুরি করছে তা উদ্বেগজনক। মানুষের মধ্যে ভয়ভীতিও কাজ করছে না। এখন করোনার একেবারেই পিকটাইম। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখন আমাদের বাসা বাড়িতে অবস্থান করতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অন্তত বাসা বাড়ি থেকে বের হওয়া উচিত নয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৬ মে (শনিবার) সরকারি ছুটি শেষ হচ্ছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি বরং অবনতি ঘটেছে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারি ছুটি ঈদ পর্যন্ত বাড়ানো বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হবে। তাছাড়া ইদুল ফিতরের আগে কর্মদিবস মাত্র চারটি- ১৭, ১৮, ১৯, ২০ মে। ২১ মে শবে কদরের ছুটি। এরপর ২২ ও ২৩ মে সাপ্তাহিক ছুটি। আবার ২৪ মে (রোববার) থেকে শুরু ঈদের ছুটি। ২৫ ও ২৬ মে’ও (সোম ও মঙ্গলবার) ঈদের ছুটি থাকবে। সরকারি ছুটির তালিকায় এভাবেই নির্ধারিত আছে। তবে রমজান মাস ২৯ দিনে শেষ হলে ঈদের ছুটি থাকবে ২৩, ২৪ ও ২৫ মে (শনি, রবি ও সোম)।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকেও পরিস্থিতি বিবেচনায় ছুটি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, দু’একদিনের মধ্যে সরকারি ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৬ মার্চ থেকে বিভিন্ন দফায় টানা ৪২ দিনের সরকারি ছুটি চলছে। সর্বশেষ গত ৫ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত সরকারি ছুটিতে জীবন জীবিকার জন্য কিছু নির্দেশনা শিথিল করে সরকার। শর্ত সাপেক্ষে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট-শপিংমল খুলে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ঘরবাড়ি থেকে বের হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। দোকানপাট, মার্কেটে মানুষের অযথা ভিড় বাড়ছে। লকডাউন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ না করায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে বলে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকেও বারবার বলা হচ্ছে।
করোনা সংক্রমণ রোধে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। তারপর তা ১১ এপ্রিল, পরে বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। চতুর্থ দফায় ছুটি ১৪ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পঞ্চম দফায় ছুটি বাড়ানো হয় ৫ মে পর্যন্ত। সেটি বাড়িয়ে সর্বশেষ করা হয়েছে ১৬ মে পর্যন্ত।
Comment here
You must be logged in to post a comment.