আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৩০ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকার বরাদ্দ থাকছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। বুধবার (১০ জুন) অনলাইনে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান বিদ্যুৎ জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বাজেট প্রস্তাবিত ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগেই বিস্তারিত তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট ২৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এবার বাজেটে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার মতো এখাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। যদিও গেলো সপ্তাহে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে প্রস্তাবিত বাজেটে ২৭ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে বলে জানানো হয়।
চলতি বছর বিদ্যুতে ৯৬ ভাগ এবং জ্বালানিতে ৭০ ভাগ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়েছে। কোভিডের কারণে এবার শতভাগ লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি কেউ। বিগত বছরগুলোয় এডিপি বাস্তবায়নে রেকর্ড করছে মন্ত্রণালয়।
প্রতিমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে জানান, কোভিডের কারণে বিতরণ কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য বাজেটে সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য আট হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে। তিনি বলেন, ‘বাজেটে এবার সঞ্চালন এবং বিতরণ খাতে বেশি বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। একটি আধুনিক সঞ্চালন এবং বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, মে পর্যন্ত বিতরণ কোম্পানি বিদ্যুৎ বিল আদায়ে ছাড় দিয়েছিল। এই সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাহলে বিতরণ কোম্পানি সংকটে পড়ে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এজন্য সবাইকে একটু একটু করে এগিয়ে আসতে হবে।
বাড়তি বিল আদায় নিয়ে তিনি বলেন, ‘গ্রাহক বিতরণ কোম্পানির সংশ্লিষ্ট এলাকায় ফোন করে সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এটি না পারলে সেখানের ঊর্ধ্বতন কারও কাছে বিষয়টি জানাতে পারেন। এতেও কাজ না হলে সরাসরি আমার কাছে জানাতে পারেন। এক্ষেত্রে গ্রাহক অনলাইনে গেলেই আমার ইমেইল অ্যাডড্রেস পাবেন। সেখানে তিনি আবেদন করতে পারেন।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি খাতে গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এজন্য ওয়েল হেড কম্প্রেসার বসানো হচ্ছে। নতুন কূপ খনন এবং সরবরাহ ব্যবস্থা ভালো করা হচ্ছে। সাগরেও তেল গ্যাস অনুসন্ধানে মাল্টিক্লোয়েন্ট সার্ভে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, এবার বাজেটে বিদ্যুতে ২৭ হাজার ৫৯৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকার মধ্যে অর্থ বিভাগ দেবে ২৪ হাজার ৮০৩ কোটি ৯৩ লাখ, ইসিএ (ঠিকাদারদের মাধ্যমে অর্থায়ন) হবে এক হাজার ৮৩৭ কোটি ৯৬ লাখ এবং নিজস্ব তহবিল থেকে আরও ৯৫৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
জ্বালানিতে তিন হাজার ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখের মধ্যে অর্থ বিভাগ দেবে এক হাজার ৮৩৫ কোটি ৬২ লাখ, জিডিএফ (গ্যাস উন্নয়ন তহবিল) থেকে ২৬০ কোটি ২৯ লাখ এবং নিজস্ব খাত থেকে আরও এক হাজার ৪২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
এবার বিদ্যুতে ৯৩ আর জ্বালানিতে ২৪ প্রকল্প পাচ্ছে এই বরাদ্দ।
Comment here
You must be logged in to post a comment.